চাকরির জন্য ইন্টারভিউ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। আসলে এ পর্যায়ে এসেই নির্ধারিত হয় চাকরিটি আপনি পাবেন কি-না। সেজন্য ইন্টারভিউতে করা প্রশ্নগুলোর যথাযথ ও কৌশলী উত্তর অতি জরুরি। কিছু সাধারণ প্রশ্ন আছে, যেগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইন্টারভিউতে করা হয়। সেসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পূর্বপ্রস্তুতি চাকরিদাতার কাছে আপনাকে কিছুটা হলেও এগিয়ে রাখবে নি:সন্দেহে। আসুন জেনে নিই তেমনি ৫টি প্রশ্ন।


১. আপনার সম্পর্কে বলুন
এই প্রশ্নটি চাকরিদাতাকে আপনার পরিচয়, আগে কী কাজ করেছেন ইত্যাদি জানতে সাহায্য করে। এর মাধ্যমে আপনার ওপর প্রতিষ্ঠান কতটুকু নির্ভর করতে পারবে তা বোঝার চেষ্টা করেন চাকরিদাতা। তাই এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে আপনার পারিবারিক পরিচয়, পড়াশোনা, চাকরি সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরুন। আর সর্বোচ্চ তিন মিনিট কথা বলুন এ ব্যাপারে। কারণ এর বেশি বলতে গেলে আপনি হয়তো অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা করতে পারেন।
২. চাকরিটির ক্ষেত্রে নিজেকে কেন যোগ্য মনে করছেন?
এ প্রশ্নের উত্তরে আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও রেজাল্টর ফিরিস্তি তুলে না ধরে সংশ্লিষ্ট চাকরির সাথে সম্পর্কিত আপনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কথা বলুন।
৩. নিজেকে কিভাবে বর্ণনা করবেন?
নিজের সম্পর্কে বলুন-এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া যদি কঠিন মনে হয়, তাহলে চুপ থেকে হালকা সময় নিন। তাহলেই হয়তো এ প্রশ্ন পেতে পারেন। প্রশ্নটি নিজেকে মার্কেটিংয়ের একটি ভালো সুযোগ। আপনি আপনার ভালো গুনগুলোর দুয়েকটি উল্লেখ করুন। তার সপক্ষে সংক্ষেপে কোনো ঘটনার কথা বলুন। ব্যক্তিত্ব সম্পর্কিত এ প্রশ্নের মাধ্যমে আপনার মৌলিক গুণ ও দক্ষতার কথা জানতে চান প্রশ্নকর্তা।
৪. আপনার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কোনটি?
এ প্রশ্নের ক্ষেত্রে ‘আমার কোনো দুর্বলতা নেই’ এমন উত্তর কখনো দিবেন না। মানুষ হিসেবে আমাদের অবশ্যই কোনো না কোনো দুর্বলতা আছে। সুতরাং এ প্রশ্নে খারাপ লাগার কিছু নেই। আপনি সততার সাথে উত্তর দিন। এমন দুর্বলতার কথা বলুন, যা সংশ্লিষ্ট চাকরির সাথে কোনোভাবেই সম্পর্কযুক্ত নয়।
আপনি অবশ্য কৌশলী হয়ে প্রশ্নটিকে ইতিবাচকও বানিয়ে ফেলতে পারেন। বলতে পারেন, আপনি অতিমাত্রায় বাস্তববাদী। এ ক্ষেত্রে দুয়েকটি উদাহরণ দিন। অতি বাস্তববাদীতা আপনাকে কিভাবে সমস্যার মুখোমুখি করেছিল তা উল্লেখ করুন। একই সাথে সে সমস্যা থেকে কিভাবে নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন তা-ও বলুন।
৫. আমাদের ব্যাপারে কিছু জানার আছে?
প্রায় সব চাকরিদাতাই ইন্টাভিউর শেষ দিকে এ প্রশ্ন করেন। এর উত্তরে এমন প্রশ্ন করুন যাতে মনে হয় এ প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আপনার বেশ আগ্রহ আছে। শুধু তাই নয়। বরং তাদের সাথে কাজ করতে আপনার ব্যাকুলতাও আছে। এক্ষেত্রে আপনি বুদ্ধিমত্তার সাথে তিন চারটি প্রশ্ন করুন। যেমন-
ক. প্রতিষ্ঠানের আগামী পাঁচ বছরের টার্গেট বা পরিকল্পনা কী?
খ. প্রথম মাসে কাজের ক্ষেত্রে আমার কাছে কী প্রত্যাশা করেন?
গ. আমাদের টিমটি কয়জনের হবে? অথবা আমাকে কয়জনের সাথে কাজ করতে হবে?
ঘ. এ প্রতিষ্ঠানের কাছে সফলতার সংজ্ঞা কী?
চাকরির ইন্টারভিউর সব প্রশ্নের প্রস্তুতি হয়তো আগে থেকে নেয়া সম্ভব হবে না। তবে পরবর্তী ইন্টারভিউর আগে অন্তত সাধারণ ৫টি প্রশ্নের প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন।
আপনার জন্য শুভ কামনা।

Post a Comment

Previous Post Next Post